BD Netizen
বিএনপির লড়াই শেষ হইয়াও হচ্ছেনা শেষ। - Printable Version

+- BD Netizen (https://bdnetizen.com)
+-- Forum: রাজনীতি (https://bdnetizen.com/forumdisplay.php?fid=2)
+--- Forum: রাজনৈতিক দল (https://bdnetizen.com/forumdisplay.php?fid=15)
+--- Thread: বিএনপির লড়াই শেষ হইয়াও হচ্ছেনা শেষ। (/showthread.php?tid=30)



বিএনপির লড়াই শেষ হইয়াও হচ্ছেনা শেষ। - fahim - 11-11-2024

আপনাদের মনে আছে তারেক রহমানের বক্তব্য?

"স্বৈরাচারের পতন হলেও গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াই এখনও শেষ হয়ে যায়নি।"

নেতা বটে!!!
অন্যরা যেটা দেখতে পায়না, ছাগলের মত লাফায়,তখন সত্যিকারের নেতা হিডেন বিপদ ঠিকই দেখতে পায়।

বাইচান্স নেতা আর বাই বর্ন নেতার মধ্যে পার্থক্য এখানেই।

৮ আগষ্ট তারিখের সমাবেশ নিয়ে বিএনপির অনেকেই ওদের পাতা ফাদে পা দিয়ে ক্ষোভ দেখাইছিলেন।
আমি তখন বলেছিলাম এইটা সময়ের প্রয়োজনে। ৮ আগষ্ট বিএনপি সমাবেশ না ডাকলে আজ বিএনপি অপাংক্তেয় হয়ে যেত। বিএনপিকে এখন ঠিকে থাকতে হলে এইরকম মাসল শো করেই চলতে হবে। এই মাসল জন সমর্থনের মাসল।

মুজিব যেমন ৭২ এর জানুয়ারিতে মুক্তিযুদ্ধকে খেয়ে দিয়েছিল।
তেমনি এই সমন্বয়ক আর তাদের আচলের নিচে থাকা জামাত ২৪ এর বিপ্লবকে স্রেফ খেয়ে দিত। জামাত নিজে কোন ক্রেডিট চায়না, তাদের দরকারও নাই।
তাদের রাজনীতিই হল অন্যকে তোষামোদি করে,পিঠে হাতিয়ে, তেল মেরে ভিতরে ভেতরে নিজেদের শক্তিশালি করা।  ( জামাত জানে তাদের কিছু ক্রেডিট নেওয়ার দরকার নাই। বিশ বছর পরও যদি ক্ষমতায় আসে, তখন সব কিছুকেই বাতিল করে বাকশাল স্টাইলে ভিন্ন আংগিকে সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিবে, )।

জামাত আপাতত মাহফুজদের তেল দিবে। মাহফুজরা খুশি হয়ে তাদের ভিসি দিবে। ব্যবসাতে সুযোগ দিবে। ব্যুরোক্রেসিতে, পুলিশে, আর্মিতে  সুযোগ দিবে।

আবার, মাহফুজদের বর্তমান ক্ষমতা দরকার, সেখানে থ্রেট বিএনপি।

জামাতের দরকার ভবিষ্যত৷ অন্তত বিশ বছর পরের সময়। তাই জামাতের জন্য মাহফুজরা সমস্যা না। মাহফুজদের জন্যও জামাত সমস্যা না।

দু পার্টির জন্যই সমস্যা বিএনপি।

তাই আবেগতাবাদিদের বলব, জামাত বা মাহফুজরা কিছু আবেগি কথা বললেই লাফ দিয়ে ঠিক ঠিক বইলা উইঠেন না।
আপনাদের এই চুলের আবেগকে ইউজ করেই প্রথম আলো থেকে মাহফুজরা কিংবা জামাতের মিডিয়া আপনাদের খেলে দেয়।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওরা সহ আওয়ামিলিগ কিছু বললে,  আমার স্ট্যান্ড নেওয়ার পুর্বে ১৮০ ডিগ্রী বিপরীতে আমার স্ট্যান্ড নেই, তারপর পক্ষে বিপক্ষে লজিক খাড়া করি। তারপর আমি সিদ্ধান্তে আসি।

বিএনপির মুল শক্তি দেশপ্রেম, জাতিয়তাবাদ ও জনপ্রিয়তা। 
এখানে ভিন্ন ভিন্ন কারণে ভিন্ন ভিন্ন শক্তি গুলোর মুল শত্রু বিএনপি। তা যতই কাছে থাকুক কিংবা দূরে।

আমি ২০০৫ এ বলতাম, (বন্ধুরা কিংবা তখনকার আমাদের সিনিয়র  নেতারা অস্বীকার করবেনা।) আমাদের লংটার্মে কোন বন্ধু নাই। সবাইই আমাদের প্রতিপক্ষ।

তখন তারেক রহমান  শিবিরের এক অনুষ্টানে গিয়ে বলেছিলেন আমরা এক পরিবার। সেটা নিয়ে সমালোচনা হইছিল অনেক।

সিলেট বিএনপির এক নেতার বাসায় বলেছিলাম জামাত যদি রাজনীতি বুঝে, তারা কখনও আমাদের লংটার্মে বন্ধুই ভাববেনা, পরিবার ভাবা তো দুরের কথা।
২০০৭ এ তার প্রমাণ তারেক রহমান পেয়েছেন। তারা মইনের সাথে আঁতাতে ছিল। তারেক রহমানের গ্রেফতারে একটি বিবৃতিই দেয়নি। বলেছে অভিযোগ ভুল সেটা তারেক রহমানকে প্রমাণ করতে হবে। ( অথচ নিজামি মোজাহিদ গ্রেফতারে বিএনপি আন্দোলন করেনি বইলা তাদের সমর্থকরা এখনও বিএনপির সমালোচনা করে!!!!

জামাতের ভোটের টার্গেট বিএনপির ভোট ব্যাংক। গত ২০ বছরে জামাতের পক্ষে যে ভোট কনভার্সন হয়েছে, তার ৯০ ভাগই দেখবেন বিএনপির ভোট। কারণ ইসলামকে আবেগ বানিয়ে যে ভোট জামাতের বাক্সে যাবে সেটা বিএনপির ইসলামের প্রতি সফট ভোটের বড় অংশ।

যেখানে জামাতের টার্গেট ভোটই হল বিএনপির ভোট। সেখানে জামাত বিএনপিকে কখনও বন্ধু নয়, বরং পিঠ বুলিয়ে ছুরি মারার কাজই করবে।

গত ২০ বছরে যে যে এলাকায় জামাত শক্তি বাড়িয়েছে প্রতিটি এলাকাই বিএনপির ঘাটি ছিল।  সেখানেই জামাত তোষামোদি করে, পিঠ বুলিয়ে, নেতাদের ব্যবসায়িক সুবিধা দিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে।
ক্ষমতায় মত্ত বিএনপি নিজের ঘর বগুড়াকেও ওপেন করে দিয়েছে। অথচ জামাত  তাদের শিবিরের দখলে থাকা ভার্সিটিগুলোতেও ন্যুনতম ছাড় দেয়নি।

জামাতের সাথে বিএনপির সমস্যার মত একই সমস্যা ফেইস করছে পাশের দেশের মোদি বিরুধী জোট ইন্ডিয়া ও কংগ্রেস।

কংগ্রেসের ঘাটিগুলোতেই কেজরিয়ালের আম আদমি পার্টি শক্তি বাড়াচ্ছে। সেখানেই কংগ্রেসের ভোট কাটছে। জোট হলেও তাই লংটার্মে আম আদমি ও কংগ্রেসের জোটও ঠিকবেনা।
ম দি তাদের এক করেছে।

যেমনি হাসিনা এক করেছিল বিএনপি ও জামাতকে।
আল্টিমেটলি বিএনপি নামক দলের ভোটের মাঠের শত্রু লীগ হলেও ঘুণপোকা হল জামাত।

যেহেতু ক্ষমতা থেকে লীগ হঠেছে, মাহফুজরা বসেছে, তাই মাহফুজরা ক্ষমতার রাজনীতিতে বিএনপিকে বর্তমান থ্রেট মনে করছে।
আবার জামাতের ভোটের মাঠের থ্রেট বিএনপি। আর লীগতো ন্যাচারাল এনিমি।

এখানে এসেই মাহফুজ, ছাত্রলীগ ও জামাতরা এক হয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে।
ভার্সিটিতে সাধারণ ছাত্রের ছদ্মবেশে সমন্বয়ক, ছাত্রলীগ ও শিবিরের গুপ্ত সদস্যারা ( যাদের শিবির কমিটিতে আনেনি এই গুপ্ত খেলা খেলতে) এক হয়ে ছাত্রদল ও বিএনপি ঠেকাতে মাঠে নেমেছে।

মনে রাইখেন, জামাতের জন্য নির্বাচন দশ বছর না হলেও সমস্যা নাই। আবার মাহফুজরাও খুশি।

দু:খ শুধু মানুষের ও বিএনপির। গণতন্ত্রের অধিকার ফিরে পাচ্ছে না। হাসিনা গিয়ে আরেক সিন্দাবাদের ভুত চেপে বসতে যাচ্ছে কিছুদিনের জন্য। সেটা হতে পারে ৩ কিংবা ৫ বছর।

তাদের বিরুদ্ধে জামাতও এক সময় আন্দোলনে নামবে, যখন তারা তাদের পুরো সেটাপ সাজিয়ে নিতে পারবে। যখন ভোটের মাঠে কোমর শক্ত করতে পারবে।

এখন ভোটে গিয়ে তাদের লাভ কি? বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তো জামাত প্রশাসনিক সেটাপে ভাগ পাবেনা। যেই সুবিধা মাহফুজরা দিতে পারবে ও দিচ্ছে।
তাই জামাত আপাতত মাহফুজদেরকেই গুরু ডাকবে, সময় হইলেই ছুরি বসাবে। যেটাতে তারা অতুলনীয়।

আর বিএনপির জন্য পথ একটাই।
তারেক রহমানের বলা সেই উক্তি ; "ফ্যাসিবাদের পতন হইলেও গণতন্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। সেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে গনতন্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত।"

বিএনপির নেতা কর্মিদের জন্য সেটাই বটম লাইন।